সাইবার ক্রাইম
Science and Technology

সাইবার ক্রাইম কি পার্ট-০১

Pathokia 

সাইবার ক্রাইম কি পার্ট -০১

কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তির নানামুখী ব্যবহারের কার্যক্রমকে ব্যাহত করতে বিভিন্ন ধরনের কম্পিউটার অপরাধ বা সাইবার ক্রাইম সংঘটিত হচ্ছে। ইন্টারনেটের বদৌলতে নানান অপরাধ কৌশল উদ্ভাবন হচ্ছে ফলে সাইবার ক্রাইম-এর মাত্রা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশে প্রায়ই ঘটছে সাইবার ক্রাইম। নিচে কিছু সাইবার ক্রাইমের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেয়া হলো।

হ্যাকিং ( Hacking ) কি?

প্রোগ্ৰাম রচনা ও প্রয়োগের মাধ্যমে কোনো কম্পিউটার সিস্টেম বা নেটওয়ার্কের ক্ষতিসাধন করাকে হ্যাকিং বলা হয়। ইন্টারনেটের ব্যাপক প্রচলনের ফলে যেমনি তথ্যের আদান-প্রদান বেড়ে গেছে বহুগুণ, ঠিক তেমনি তথ্য গায়েব, তথ্য চুরি এবং পথিমধ্যে তথ্য বিকৃতি ঘটানোর নজিরও লক্ষ করা যায়। আর এ কাজটি যারা করছে মূলত তাদেরকে হ্যাকার বলে অভিহিত করা হয়। হ্যাকারদের যাবতীয় কর্মকাণ্ডকে হ্যাকিং বলে অভিহিত করা হয়।

( হ্যাকিং নৈতিকতা বিরোধী কর্মকাণ্ড )- কারণ হ্যাকারগণ হ্যাকিং এর মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে লক্ষ হিসেবে নির্ধারণ করে নেটওয়ার্ক সিস্টেমকে ভেঙ্গে সেখান থেকে তথ্য ও অর্থ চুরি করে। আবার কখনও কখনও হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে ভাইরাস বা মৃণালওয়্যার প্রোগ্ৰাম ঢুকিয়ে দিয়ে নেটওয়ার্ক বা তথ্য ব্যবস্থাকে ধ্বংস কিংবা এর নানা ধরনের ক্ষতিসাধন করা হয় যা সুস্পষ্টভাবেই আইনবিরুদ্ধ কাজ। আর যারা এ কাজটি করে তারা আইনের দৃষ্টিতে সাইবার ক্রিমিনাল হিসেবে বিবেচিত হয়।

বর্তমানে হ্যাকার প্রধানত ৩ ধরনের । যথাঃ

(ক) হোয়াইট হ্যাট হ্যাকার : এরা নেটওয়ার্কের দুর্বলতাকে খুঁজে বের করে তা যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে এবং দুর্বল দিকগুলোকে ঠিক করার মাধ্যমে নেটওয়ার্কের সুরক্ষার জন্য কাজ করে অর্থ উপার্জন করে।

(খ) ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকার : বিভিন্ন ব্যাক্তি ও প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য, আর্থিক তথ্যাদি হাতিয়ে নিয়ে সাধারণত আর্থিক ক্ষতিসাধন করে।

(গ) গ্ৰে হ্যাট হ্যাকার : সাধারণত এরা ডেটা বা সিস্টেমের ক্ষতি করে না তবে কিছু ক্ষেত্রে ক্ষতি করে থাকে। তাছাড়া কাজের ক্ষেত্রে ভীষণ দক্ষ হয়।

ফ্রেকিং

ফ্রেকিং বা Phreaking শব্দটি এসেছে Phone এবং Freak শব্দ দুটোর সমষ্টি থেকে। বিভিন্ন টেলিকমিউনিকেশন সিস্টেমকে হ্যাক করে অসৎ উদ্দেশ্যে ব্যবহার করার প্রক্রিয়াকে ফ্রেকিং ( Phreaking ) বলা হয়। একসময় যখন কম্পিউটার সিস্টেম প্রচলিত ছিল না তখন হ্যাকাররা টেলিফোন নানা ধরনের হ্যাকিং পরিচালনা করত। সাধারণভাবে ফোন হ্যাকারদের Phreaker নামে অভিহিত করা হয়।

স্পুফিং ও স্নিফিং ( Spoofing and Sniffing )

ভুয়া ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আর্থিক তথ্যাদি হাতিয়ে নেয়ার একটি সাধারণ পদ্ধতি হিসেবে ক্রমেই ( স্পুফিং ) জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। স্পুফড সাইট হলো প্রকৃত সাইটের প্রায় কাছাকাছি একটি মিরর ইমেজ। যতক্ষণ পর্যন্ত না কোনো ব্যবহারকারী স্পুফকে খুব কাছে থেকে পর্যবেক্ষণ করেন ততক্ষণ পর্যন্ত তিনি এর উপস্থিতি বুঝতে পারেন না। অসতর্ক মুহূর্তে ব্যবহারকারীরা গুরুত্বপূর্ণ নানা ব্যাক্তিগত ও আর্থিক তথ্য এতে দিয়ে দেন। অন্যদিকে ট্রাস্নমিশন লাইন দিয়ে তথ্য যাবার সময় তথ্যকে তুলে নেয়ার একটি জনপ্রিয় পদ্ধতি হলো ( স্নিফিং )। সাধারণত তার বা তারবিহীন ব্যবস্থাকে স্নিফিং করা হয়ে থাকে। স্নিফিং শনাক্ত করা প্রায় অসম্ভব। তাই এর বিরুদ্ধে সুরক্ষার জন্য ডেটা এনক্রিপশন হলো একমাত্র পথ।

ডেনিয়াল অব সার্ভিস অ্যাটাকস্ ( Denial of Service Attacks )

ডেনিয়াল অব সার্ভিস অ্যাটাক্টস্ হলো এমন একটি উদ্যেগ, যার মাধ্যমে একটি কম্পিউটার বা নেটওয়ার্ক রিসোর্সকে এর বৈধ ব্যবহারকারীদের কাছে দুষ্প্রাপ্য করে রাখা হয়। এর মাধ্যমে এক বা একাধিক ব্যক্তিকে কোনো ইন্টারনেট সাইট বা সেবা হতে আংশিক বা পুরোপুরি অথবা সাময়িকভাবে বঞ্চিত রাখা হয় । ফলে ই-মেইল, ওয়েবসাইট, অনলাইন অ্যাকাউন্ট ( ব্যাংকিং ) বা অন্যান্য সেবাসমূহে অ্যাকসেস করা যায় না।

স্প্যামিং ( Spamming )

অনাকাঙ্ক্ষিত বাল্ক মেসেজ সমূহ ব্যাপকভাবে প্রেরণ ‌ইলেকট্রনিক মেসেজিং সিস্টেমসমূহ ব্যবহার হলো স্প্যাম তথা স্প্যামিং। এর মাধ্যমে একাধিক মেইলিং লিস্ট, পৃথক পৃথক ব্যাক্তি বা নিউজগ্ৰুপগুলোতে অনাকাঙ্ক্ষিত মেসেজসমূহ প্রেরণ করা হয়ে থাকে। এসব মেসেজ প্রায় সময়ই বাণিজ্যিক ধাঁচের হয়। এগুলোকে জাঙ্ক মেইল নামেও অভিহিত করা হয়। বিজ্ঞাপনের মোড়কে স্প্যামগুলো অনেক সময়ই আইডেন্টি থেফট বা অন্য কোনো ধরনের ইন্টারনেট জালিয়াতির উদ্দেশ্যে প্রেরণ করা হয়ে থাকে।

সাইবার-আক্রমণ ( Cyber-attack ) বা সাইবার ওয়ারফেয়ার কি?

সাইবার-আক্রামণ হলো কোনো কম্পিউটারের নিয়ন্ত্রণ অর্জনের প্রচেষ্টা কোনো ব্যক্তি বা গ্ৰুপের অনুমতি ছাড়াই তাদের সমগ্ৰ গতিবিধিকে ট্র্যাক করা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যেমন সন্ত্রাসী গ্ৰুপগুলো নানা। ধরনের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ পরিচালনা করে, ঠিক তেমনি আজকাল বিভিন্ন দেশ ও গোষ্ঠীও ইন্টারনেটের মাধ্যমে সাইবার সন্ত্রাস চালিয়ে থাকে।

সাইবার ক্রাইম পাঠ-০২ পড়তে এখানে ক্লিক করুন।

Recommended Posts

বাংলাদেশের ঐতিহাসিক মসজিদ
World Heritage Bangladesh

ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন মসজিদ

মুসলমানদের তথা মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র উপসনালয় মসজিদ। বাংলাদেশ মুসলিম সংখ্যা গরিষ্ঠ দেশ হলেও এখানকার ইসলামের ইতিহাস তেমন পুরাতন নয়। বাংলাদেশে কিছু প্রাচীন মসজিদ ছাড়া মোঘল আমলের পূর্বের প্রায় সকল প্রাচীন মসজিদ ই ধ্বংস হয়ে গেছে। আজ আমরা তেমনই কিছু ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন মসজিদ সম্পর্কে জানবো। সিংগাইর মসজিদঃ মধ্যযুগীয় এই সিংগাইর মসজিদটি ষাটগম্বুজ মসজিদের দক্ষিণ-পূর্ব কোনে অবসিহত। […]

Pathokia 

গেঁটেবাত থেকে মুক্তির উপায়

গেঁটেবাত থেকে মুক্তির উপায় শতাধিক প্রকারের বাতরোগের মধ্যে রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস বা গেঁটেবাত অন্যতম। সাধারণত বয়স্করা এ রোগে আক্রান্ত হয়।কম বয়সী ছেলেমেয়েদের বেলায় গিঁটে ব্যথা বা যন্ত্রনা হওয়া রিউমেটিক ফিভার বা বাতজ্বর ( Rheumatic Fever ) জাতীয় অন্য রোগের লক্ষণ হতে পারে। মানব শরীরে রক্তের সঙ্গে ইউরিক অ্যাসিড (Uric Acid) নামে এক ধরনের উপাদান থাকে, যার […]

Pathokia 
Artimis:NASA’s Mega Moon Rocket
Science and Technology

আর্টেমিস : আবারও চাঁদের বুকে মানুষ

আর্টেমিস :আবারও চাঁদের বুকে মানুষ Artimis:NASA’s Mega Moon Rocket দীর্ঘ পাঁচ দশক পর আবারও চাঁদের বুকে মানুষ পাঠানোর অভিযানে নাসা। তিন ধাপের মিশনে মনুষ্যবিহীন প্রথম রকেট টি ২৯ আগস্ট যাওয়ার কথা ছিল। আর শেষ ধাপে পাঠানোর কথা ছিল মানুষ। এর মাধ্যমে শুরু হতে যাচ্ছিল বহুল প্রতীক্ষিত আর্টেমিস যুগের। ফ্লোরিডার কেপ কেনেডি স্পেস সেন্টারে (Kennedy Space […]

Pathokia