
বিভিন্ন সময়ে হজ্ব বাতিল কেন হয়েছিল?
ইসলামের মূল পাঁচটি স্তম্ভের একটি হলো হজ্ব। আরবী ‘হজ্ব’ এর বাংলা প্রতিশব্দ হচ্ছে ‘সংকল্প করা’ বা ‘কোথাও যাওয়ার ইচ্ছা করা’। জিলহজ্জ মাসের নির্দিষ্ট তারিখে পবিত্র কা’বা ঘরকে কেন্দ্র করে তাওয়াফ বা প্রদক্ষিণ, সাফা-মারওয়া পাহাড়ে সাঈ , আরাফা মাঠ-মিনা-মুজদালিফায় অবস্থানসহ হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কর্তৃক নির্ধারিত প্রক্রিয়ায় আনুষঙ্গিক ইবাদতসমূহ পালন করাকে হজ্ব বলে।জানা যায়, আল্লাহর নির্দেশে ইব্রাহিম (আঃ) তাঁর স্ত্রী হাজেরা ও পুত্র ইসমাইলকে মক্কার মরুভূমিতে একা রেখে যায়।পানির বা কোন কাফেলার সন্ধানে হজরত হাজেরা আঃ মরিয়া হয়ে সাফা এবং মারওয়া পাহাড়ের দৌড়ে কিছুই না পেয়ে হতাশায় ফিরে আসার সময় দেখতে পেলেন যে, শিশুটি তার পা দিয়ে মাটিতে আঘাত করছে এবং তার পায়ের নীচে একটি পানির ঝর্ণা প্রবাহিত হয়েছে। পরে আল্লাহ তাআলা ইব্রাহিম (আঃ) কে ক্বাবা ঘর নির্মাণ এবং সেখানে প্রতি বছর নির্দি ষ্হট সময়ে হজ্জ পালনের নির্দে।শ দেন।বিভিন্ন কারণে বিভিন্ন সময় ইসলামের ইতিহাসে হজ্ব বাতিল হয়েছিল। আজ আমরা জানব বিভিন্ন সময়ে হজ্ব বাতিল কেন হয়েছিল?
হজ্ব বাতিলের কারণঃ
- হজ্ব বাতিল করা একটি ব্যতিক্রমী ঘটনা হলেও আগে বিভিন্ন সময় হজ্ব বাতিল করা হয়েছিল। 865 খ্রিস্টাব্দে প্রথমবার হজ্ব বাতিল করা হয়েছিল। যা ছিল আব্বাসীয়দের সময় ঈসমাইল বিন ইউসুফের মক্কা আক্রমণের কারণে।
- তারপরে ৯৩০ সালে আরো একবার হজ্ব বন্ধ হয়েছিল।। কট্টর শিয়াদের আক্রমণে সেই ৯৩০ সালে মোট ৩০,০০০ হাজী শহীদ হয়েছিল। তারা হাজীদেরকে হত্যা করে এবং তাদের লাশ জমজম কূপের ফেলে দিয়েছিল। তারপরে যখন শিয়ারা ফিরে চলে যায় তখন তারা সাথে করে হাযরে আসওয়াদ বাহারাইনে নিয়ে চলে গিয়েছিল। তারপরে হাযরে আসওয়াদ পুনরুদ্ধার হওয়ার আগ পর্যন্ত এক দশক হজ বন্ধ ছিল।

এর আগে এবং পরেও কিছু সময় হজ্ব বাতিলের ঘটনা ঘটেছিল।
- কিছু রাজনৈতিক কারণে ৯৮৩ থেকে ৯৯০ সাল পর্যন্ত হজ্ব বাতিল হয়েছিল। আব্বাসীয় খিলাফত এবং ফাতেমীয় খিলাফত এর মধ্যকার দ্বন্দ্বের কারণে সেই সময় আট বছর পর্যন্ত হজ বন্ধ ছিল। আব্বাসীয় খিলাফত নিয়ে দ্বন্দ্ব হয়েছিল ইরাক ও সিরিয়ার মধ্যে এবং ফাতেমীয় খিলাফতের মধ্যে দ্বন্দ্ব হয়েছিল মিশরে।
- যুদ্ধ-বিগ্রহ এবং রাজনৈতিক কারণ ছাড়াও মহামারীর কারণেও হজ্ব বাতিল হয়েছিল। ১৮১৪ সালে হেজাজ প্রদেশে প্লেগের কারণে ৮০০০ মানুষ মারা যায়। এই কারণে প্রথমত সেই সময়ে হজ্ব বাতিল করা হয়।
- এরপরে আঠার ১৮৩১ সালে ইন্ডিয়া থেকে মক্কায় যাওয়ার সময় হাজীদের মধ্যে প্লেগ ছড়িয়ে পড়ে এবং চার ভাগের মধ্যে তিন ভাগ হাজী মৃত্যুবরণ করেন। ফলে সেই বছরে হজ বাতিল করা হয় তাছাড়া হাজার .১৮৩৭থেকে হাজার ১৮৫৮ সালের মধ্যে প্লেগ এবং কলেরা মহামারীর জন্য তিনবারে মোট সাত বছর হজ বন্ধ ছিল।
- আর সম্প্রতি সময়ে ২০২০ সালে করোনা মহামারীতে হজ্ব সীমিত আকারে পালন করে হয়েছিল।
এমন অনেক ইতিহাস জানতে এখানে ক্লিক করুণ…