Twitter Takipçi Satın AlKartal evden eve nakliyatimplant

বাংলার প্রাচীন রাজাদের ইতিহাস

বাংলার প্রাচীন রাজাদের ইতিহাস

বাংলায় মৌর্য মুখ ( The Maurya Age of Bengal )

বাংলায় মৌর্য বংশের সম্রাটদের  কথা উল্লেখ করা হলোঃ

চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য ( খ্রিস্টপূর্ব ৩২৮খ্রিস্টপূর্ব ৩০০ অব্দ ) :

ভারতীয় উপমহাদেশের প্রথম সাম্রাজ্যের নাম মৌর্য সাম্রাজ্য। চন্ত্রগুপ্ত মৌর্য খ্রিস্টপূর্ব ৩২১ অব্দে মগধের সিংহাসনে আরোহণের মাধ্যমে ভারতে মৌর্য সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ভারতের প্রথম সম্রাট। পাটলিপুত্র ছিল তাঁর রাজধানী। চাণক্য ছিল তাঁর প্রধানমন্ত্রী। চাণক্যের বিখ্যাত ছন্মনাম কৌটিল্য, যা তিনি তাঁর বিখ্যাত সংস্কৃত গ্ৰন্থ ( অর্থশাস্ত্র ) এ গ্ৰহণ করেছেন। রাষ্ট্রশাসন ও কূটনীতিকৌশলের সার সংক্ষেপ এই অর্থশাস্ত্র। তিনি আলেকজান্ডারের সেনাপতি সেলিউকসকে পরাজিত করে উপমহাদেশ হতে গ্ৰিকদের তাড়িয়ে দেন। গ্ৰিক সেনাপতি সেলিউকাস খ্রিস্টপূর্ব ৩০২ অব্দে মেগাস্থিনিস নামে একজন গ্ৰিক দূতকে চন্দ্রগুপ্তের রাজদরবারে প্রেরণ করেছিলেন। তিনি কয়েকবছর এদেশে অবস্থান করে মৌর্য শাসন সম্পর্কে তাঁর অভিজ্ঞতা ( ইন্ডিকা ) নামক গ্ৰন্থে লিপিবদ্ধ করেন।

সম্রাট অশোক ( খ্রিস্টপূর্ব ২৭৩খ্রিস্টপূর্ব ২৩২ অব্দ ) :

মৌর্য বংশের তৃতীয় সম্রাট ছিলেন অশোক। উত্তর বাংলায় মৌর্য শাসন প্রতিষ্ঠিত হয় সম্রাট অশোকের রাজত্বকালে। অঞ্চলটি মৌর্যদের একটি প্রদেশে পরিণত হয়েছিল। প্রাচীন পুন্ড্রনগর ছিল এ প্রদেশের রাজধানী। মহাস্থনগড়ে সম্রাট অশোকের একটি শিলালিপি পাওয়া গেছে। ( কলিঙ্গের যুদ্ধ ) সম্রাট অশোকের জীবনে ছিল এক মাইলস্টোন। যুদ্ধে কলিঙ্গ রাজ সম্পূর্ণ পরাজিত হন এবং এক লক্ষ লোক নিহত হয়। কলিঙ্গ যুদ্ধের রক্তস্রোত অশোকের মনে গভীর বেদনার রেখাপাত করে। তখন কৃতকর্মের অনুশোচনায় মুহ্যমান অশোক বৌদ্ধ ধর্মে দীক্ষা গ্ৰহণ করে। তাঁর শাসনামলে বৌদ্ধধর্ম রাজধর্ম হিসেবে স্বীকৃতি পায়। তাঁর চেষ্টায় বৌদ্ধধর্ম বিশ্বধর্মের মর্যাদা পায়। এজন্য তাঁকে ( বৌদ্ধধর্মের কনস্ট্যানটাইন ) বলা হয়।

বাংলায় গুপ্ত যুগ(The Gupta Age Of Bengal)

প্রাচীন ভারতীয় উপমহাদেশের গুপ্ত যুগকে স্বর্ণযুগ বলা হয়। কারণ এ যুগে সাহিত্য, বিজ্ঞান ও শিল্পের খুবই উন্নতি হয়।

প্রথম চন্দ্রগুপ্ত ( ৩২০- ৩৪০ সাল )

ভারতে গুপ্তবংশের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন প্রথম চন্দ্রগুপ্ত। তিনি ৩২০ সালে পাটলিপুত্রের সিংহাসনে আরোহন করেন।

সমুদ্রগুপ্ত ( ৩৪০- ৩৮০ সাল )

চন্দ্রগুপ্তের মৃত্যুর পর সমুদ্রগুপ্ত পাটলিপুত্রের ( পাটনা ) সিংহাসনে বসে। তিনি ছিলেন গুপ্ত বংশের শ্রেষ্ঠ রাজা। তাঁকে ( প্রাচীন ভারতের নেপোলিয়ন ) বলা হয়। তাঁর আমলে সমতট ছাড়া বাংলার অন্যান্য জনপদ গুপ্ত সাম্রাজ্যের অধীনে ছিল। গুপ্ত অধিকৃত বাংলার রাজধানীও ছিল পুন্ড্রনগর।

 দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত ( ৩৮০৪১৫ সাল )

সমুদ্রগুপ্তের মৃত্যুর পর দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত পাটলিপুত্রের সিংহাসনে বসেন। তিনি মালবের উজ্জয়িনীতে সাম্রাজ্যের দ্বিতীয় রাজধানী স্থাপন করেন। ( বিক্রমাদিত্যে ) ছিল তাঁর উপাধি। অনেক প্রতিভাবান ও গুণি ব্যক্তি তাঁর দরবারে সমবেত হয়েছিলেন। এঁদের মধ্যে প্রধান নয়জনকে ( নবরত্ন ) বলা হয়। তাঁর সভায় কালিদাস, বিশাখ দত্ত, নাগার্জুন, আর্যদেব, সিদ্ধসেন, দিবাকর প্রমুখ কবি সাহিত্যিকের সমাবেশ ঘটে। আর্যভট্ট এবং বরাহমিহির ছিলেন বিখ্যাত বিজ্ঞানী। আর্যভট্ট গ্ৰন্থের নাম ( আর্য সিদ্ধান্ত ) বরাহ মিহির ছিলেন একজন জ্যেতিরর্বিদ। তাঁর বিখ্যাত গ্ৰন্থের নাম ( বৃহৎ সংহিত )। দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের রাজত্বকালের ফা- হিয়েন নামক একজন চীনা পর্যটক ভারতে আসেন। তিনি ১০ বছর ভারতবর্ষে অবস্থান করেছিলেন। ফা- হিয়েন তাঁর ভারতে অবস্থানকালে তাঁর অভিজ্ঞতা সম্পর্কে ৭টি গ্ৰন্থ রচনা করেন। এর মধ্যে ( ফো- কুয়ো- কিং ) বিশেষ উল্লেখযোগ্য। ভারতের বিশাল গুপ্ত সাম্রাজ্যের পতন ঘটে ৬ষ্ঠ শতকের প্রথমার্ধে । গুপ্ত সম্রাজ্য মধ্য এশিয়ার দুর্ধর্ষ যাযাবর জাতি হুনদের আক্রমণে শেষ হয়ে যায় ।

গুপ্ত পরবর্তী যুগ(Post Gupta Period )

হর্ষবর্ধন ( ৬০৬- ৬৪৭ )

হর্ষবর্ধন পুষ্যভূতি বংশের শ্রেষ্ঠ রাজা। তাঁর সময়ের বিখ্যাত সাহিত্যিক ছিলেন বানভট্ট। বানভট্টের বিখ্যাত গ্ৰন্থ ( হর্ষচরিত ) ।
হিউয়েন সাঙ এর বিবরণ: হিউয়েন সাঙ ছিলেন চীন দেশীয় বৌদ্ধ পণ্ডিত। হর্ষবর্ধনের দরবারে তিনি আটবছর কাটান। তিনি তাঁর ভ্রমন সম্পর্কে লিখেন। কনৌজ ছিল এদেশের রাজধানী। এটি ছিল অত্যন্ত সুন্দর। তিনি নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়কে ভারতের সবচেয়ে বড় বিশ্ববিদ্যালয় বলে উল্লেখ করেন। ( নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় ) কে বিশ্বের প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয় মনে করা হয়।

গুপ্ত পরবর্তী বাংলা(Bengal in Post Gupta Period ) 

গুপ্তবংশের পতনের পর বাংলায় দুটি স্বাধীন রাজ্যের উদ্ভব হয়। এর একটি ছিল ( বঙ্গ রাজ্য ) । রাজ্যটির অবস্থান ছিল দক্ষিণপূর্ব বাংলা এবং পশ্চিম বাংলার দক্ষিণাঞ্চল। দ্বিতীয় স্বাধীন রাজ্যের নাম গৌড়। এর অবস্থান ছিল বাংলার পশ্চিম এবং উত্তরাঞ্চল জড়ে।

স্বাধীন বঙ্গ রাজ্য ( Independent Kingdom of Bengal ) :

প্রাচীনকালে রাজার তামার পাতে খোদাই করে বিভিন্ন ঘোষণা বা নির্দেশ দিতেন। এগুলোকে তাম্রশাসন বলা হত। স্বাধীন বঙ্গ রাজ্য আমলের এ রকম ৭টি তাম্র লিপি পাওয়া গেছে।

স্বাধীন গৌড় রাজ্য ( Independent Kingdom of Gaur ) :

গুপ্ত রাজাদের অধীনে বড় কোন অঞ্চলের শাসনকর্তাকে বলা হত ( মহাসামন্ত ) শশাঙ্ক ছিলেন গুপ্ত রাজা মহাসেন গুপ্তের একজন মহাসামন্ত। শশাঙ্ক গৌড়ের রাজা হয়েছিলেন ৬০৬ সালের কিছু আগে। তিনি প্রাচীন বাংলার জনপদগুলোকে গৌড় নামে একত্রিত করেন। শশাঙ্কের উপাধি ছিল রাজাধিরাজ। তিনি‌ ছিলেন বাংলার প্রথম স্বাধীন ও সার্বভৌম রাজা। শশাঙ্গ রাজধানী স্থাপন করেন‌ কর্ণসুবর্ণে। এটি ছিল বর্তমান মুর্শিদাবাদ জেলায়।

পাল বংশের রাজনৈতিক ইতিহাস(The Political History of Pala Dynasty )

মাতস্যন্যায় ( Matsyanayam )

শশাঙ্গের পর দীর্ঘদিন বাংলায় কোন যোগ্য শাসক ছিলনা। ফলে রাজ্যে বিশৃঙ্খলা ও অরাজকতা দেখা দেয়। কেন্দ্রীয় শাসন শক্তভাবে ধরার মত কেউ ছিলনা। সামন্ত রাজারা প্রত্যেকেই বাংলার রাজা হওয়ার কল্পনায় অস্ত্র নিয়ে ঝাপিয়ে পড়তে থাকেন। এ অরাজকতাপূর্ণ সময় ( ৭ম – ৮ম শতক ) কে পাল তাম্র শাসনে আখ্যায়িত করা হয়েছে ( মাৎস্যন্যায় ) বলে। পুকুরে বড় মাছগুলো শক্তির দাপটে ছোট ছোট মাছ ধরে ধরে খেয়ে ফেলার বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিকে বলে ( মাৎস্যন্যায় )। বাংলার সবল অধিপতিরা এমনি করে ছোট ছোট অঞ্চলগুলোকে গ্ৰাস করেছিল।

গোপাল ( ৭৫৬৭৮১ সাল )

৭৫৬ খ্রিস্টাব্দে বাংলার অরাজক পরিস্থিতির পতন ঘটে পাল রাজত্বের উত্থানের মধ্য দিয়ে। গোপাল ছিলেন পাল বংশের প্রথম রাজা । বংশানুক্রমিক শাসন শুরু হয় পাল বংশের রাজত্বকালে এটা কিন্তু বাংলায় প্রথম। পাল বংশের রাজার একটানা ৪০০ বছর এদেশ শাসন করেছিলেন। এত দীর্ঘ সময় আর কোন রাজবংশ এদেশে শাসন করেননি। পাল বংশের রাজারা ছিলেন বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী।

ধর্মপাল ( ৭৮১৮২১ সাল )

পাল রাজাদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ ছিলেন গোপালের পুত্র ধর্মপাল। তার যুগে তিনটি রাজবংশ প্রতিযোগিতায় নেমেছিল উত্তর ভারতে আধিপত্য বিস্তার করতে। একটি বাংলার পাল বংশ, অন্যটির রাজপুতানার গুর্জর প্রতীহার বংশ এবং তৃতীয়টি দাক্ষিণাত্যের রাষ্ট্রকুট বংশ। ইতিহাসে এ যুদ্ধ পরিচিত হয়েছে ( ত্রিশক্তির সংঘর্ষ ) ( Tripartite War ) নামে।

প্রথম মহীপাল ( ৯৯৫১০৪৩ খ্রি.)

বাংলার প্রাচীনতম চিত্রকলার নিদর্শন পাল- আমলে রাজা মহীপাল দেব এর সময়ে তালপাতার অঙ্কিত নালন্দা মহাবিহারের ( বৌদ্ধ- অনুচিত )

দ্বিতীয় মহীপাল ( ৯০৭৫১০৮০ খ্রি.)

বরেন্দ্র বিদ্রোহ পাল রাজা দ্বিতীয় মহীপালের রাজত্বকালে সংঘঠিত হয়। এ বিদ্রোহের ফলে দ্বিতীয় মহীপালের মৃত্যু ঘটে এবং কৈবর্ত প্রধান দিব্যা হাতে বরেন্দ্রের ( উত্তর বাংলা ) চলে আসে।‌

 রামপাল ( ১০৮২১১২৪ সাল )

পাল বংশের সর্বশেষ রাজা ছিলেন রামপাল। সন্ধ্যাকর নন্দীর ( রামচরিত ) গ্ৰন্থ থেকে রামপালের রাজত্ব সম্পর্কে জানা যায়।বরেন্দ্র এলাকায় পানিকষ্ট দূ্র করার জন্য তিনি অনেক দীঘি খনন করেন। দিনাজপুর শহরের নিকট যে ( রামসাগর ) রয়েছে তা রামপালের কীর্তি।

জেনে রাখা ভালো, পাল রাজা দ্বিতীয় মহীপালের রাজত্বকালে ( আনুমানিক ১০৭৫- ১০৮০ খ্রি.) সংঘটিত হয় বরেন্দ্র বিদ্রোহ। এই বিদ্রোহের ফলে দ্বিতীয় মহীপালের মৃত্যু এবং কৈবর্ত প্রধান দিব্যের হাতে বরেন্দ্রের ( উত্তর বাংলা ) অধিকার চলে যায়। ফলে এই বিদ্রোহ কৈবর্ত বিদ্রোহ নামেও পরিচিত। আর কৈবর্ত বিদ্রোহের নেতা ছিলেন দিব্য।

সেন রাজাদের ইতিহাস (The History of the Sena Kings)

হেমন্ত সেন বাংলার ব্যাপক অংশ জুড়ে একাদশ শতাব্দীর মাঝপূর্বে প্রতিষ্ঠিত হয় শক্তিশালী সেন বংশের শাসন। বাংলায় সেন বংশের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন সামন্ত সেন। তিনি কর্ণাট থেকে বৃদ্ধ বয়সে বাংলায় আসেন। তিনি প্রথমে বসতি স্থাপন‌ করেন রাঢ় অঞ্চলে গঙ্গা নদীর তীরে। তিনি রাজ্য প্রতিষ্ঠা না করায় সেন‌ বংশের প্রথম রাজার মর্যাদা দেওয়া হয় সামন্ত সেনের পুত্র হেমন্ত সেনকে।

বিজয়সেন‌ ( ১০৯৮১১৬০ ) সেন বংশের সর্বশ্রেষ্ঠ রাজা ছিলেন বিজয়সেন‌।

বল্লাল সেন ( ১১৬০১১৭৮ ) বল্লাল সেন বাংলায় সামাজিক সংস্কার বিশেষ করে কৌলিন্য প্রথার প্রবর্তনকারী হিসাবে পরিচিত।

লক্ষণ সেন ( ১১৭৮১২০৬ ) ১২০৪ সালে মুসলিম সেনাপতি ইখতিয়ার উদ্দিন মুহাম্মদ বখতিয়ার খলজী লক্ষণ সেনকে পরাজিত করে নদীয়া দখল করেন। লক্ষণ সেনের পরাজয়ের মধ্য দিয়ে বাংলায় সেন শাসনের অবসান হয়। সেন বংশের রাজারা ছিলেন হিন্দু ধর্মাবলম্বী। সেনযুগের অবসানের মধ্য দিয়ে বাংলায় হিন্দু রাজাদের শাসনের অবসান ঘটে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

istanbul escorthacklink satın alporno izleizmir escorteryaman escortankara escortGaziantep escortonwin girişHacklink satın alTavşanlı escortGiresun escortizmir escortankara escortkayseri escort