Twitter Takipçi Satın AlKartal evden eve nakliyatimplant

প্রাচীন পারস্য সভ্যতা

প্রাচীন পারস্য সভ্যতা

প্রাচীন পারস্য সভ্যতা

পৃথিবীর প্রাচীনতম সভ্যতা গুলির মধ্যে একটি হলো পারস্য সভ্যতা। একটা সময় ছিলো যখন পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী সাম্রাজ্য ছিলো পারসিয়ানদের। শুধুমাত্র ২০০ বছরের শাসনে তারা ২০০ মিলিয়ন বর্গ মিটার অঞ্চল দখলে এনেছিলো।মিশর-গ্রিসের উত্তরাঞ্চল থেকে শুরু করে ভারতের পূর্বাঞ্চল তাদের দখলে ছিলো। পারসিয়ান সম্রাট দক্ষ রাজ্য পরিচালনা এবং সামরিক শক্তির জন্যে সুপরিচিত ছিলেন।

প্রাচীন পারস্য সভ্যতা

পারস্য উপসাগরের উপকূল ঘেঁষে উত্তর-পশ্চিম এবং দক্ষিণ-পূর্ব কোন বরাবর সগৌরবে দাঁড়িয়ে রয়েছে জাগ্রোস পর্বতমালা। এ পর্বতমালা পাদদেশ থেকে পূর্বদিকে ভারতীয় প্লেট পর্যন্ত বিস্তৃত  ইরানী মালভূমি। ভৌগোলিকভাবে ত্রিকোণাকৃতির এ অঞ্চল ১৯৩৫ সাল পর্যন্ত পারস্য নামে পরিচিত ছিল।  যা আজকের দিনে ইরান নামে পরিচিত। এই অঞ্চলেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ইতিহাস বিখ্যাত পারস্য সম্রাজ্য।

পৃথিবীর ইতিহাসে আজ অবধি যতগুলো বৃহৎ এবং প্রভাবশালী সাম্রাজ্যের নাম পাওয়া যায় তার মধ্যে পারস্য সাম্রাজ্যের নাম একেবারে উপরের দিকেই থাকবে। ভৌগলিক অবস্থান,  উন্নত শাসনব্যবস্থা,  শিল্প-সংস্কৃতি, স্থাপত্যকলা, বিজ্ঞান-প্রযুক্তি প্রভৃতি বিষয়ে পারস্যের পরাশক্তি হয়ে ওঠার পেছনে মূল ভূমিকা পালন করেছিল।  আজ প্রাচীন পারস্য সভ্যতার শুরুর দিককার কিছু কথা জানবো।

পারস্য বা বর্তমান ইরান ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে বিভিন্ন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে যে, পুরাতন প্রস্তর যুগে আজ থেকে প্রায় এক লক্ষ বছর আগে এখানে মানুষের বসবাস ছিল। বিভিন্ন শিকারী-সংগ্রাহক গোষ্ঠীর মানুষ খ্রিস্টপূর্ব ১০ হাজার সালের আগেই এখানে বসবাস স্থাপন করছে। এমনকি নিয়ানডার্থাল মানুষের বসবাসের নমুনাও পাওয়া গেছে এখানে। প্রাচীন ইলাম সভ্যতার অবস্থান ছিল এই অঞ্চলে। চৌগাবনট অঞ্চলে প্রাপ্ত প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন মূলক খ্রিস্টপূর্ব ৭২০০ সালের দিকে নির্মিত হয়েছিল। পরবর্তীতে সুমেরিয়ান, অ্যাসিরিয়ান, মেডিয়ান সভ্যতার মানুষেরা প্রাচীন এ সভ্যতা শাসন করেছিল। খ্রিস্টপূর্ব ৩০০০ থেকে ২০০০ সালের মধ্যে বিভিন্ন আরিয়ান বা আর্য গোষ্ঠীর মানুষেরা এই অঞ্চলে আসতে শুরু করে।

পরবর্তীতে তাদের বসবাসের এই অঞ্চল আরিয়ান বা তা থেকে ইরান অর্থাৎ আর্যদের ভূমি বলে পরিচিত হতে শুরু করে। প্রাচীন ইরানী ভাষা  আবেস্তা অনুসারে আরিয়ান বা আর্য  শব্দটির মাধ্যমে “উন্নত”, “সভ্য” ও “স্বাধীন” এক শ্রেণীর মানুষদের বোঝানো হতো।  শব্দটির সাথে কোন নির্দিষ্ট জাতির বা  বিশেষ করে “ককেশীয়” সাদা চামড়ার মানুষের কোন সম্পর্ক নেই।  পরবর্তীতে ১৯ শতকের দিকে ইউরোপীয়দের শ্রেষ্ঠ হিসেবে দেখানোর উদ্দেশ্যে শব্দটির ভুল ব্যাখ্যা করা হয়।  দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হিটলার তার ইউরোপীয় বিশেষিত  জার্মান জাতিগত শ্রেষ্ঠত্বের ভিত্তি হিসেবে এই ভুল ধারণাটিকে ব্যবহার করেই নানা দেশে ইহুদী, রমা  ইত্যাদি জনগোষ্ঠীর মানুষের উপর গণহত্যা চালিয়েছিল। পৃথিবীর অনেক উগ্র  জাতিবাদী গোষ্ঠী তাদের বিশ্বাস এর মূল ভিত্তি হিসেবে ধারণাটি ব্যবহার করে থাকে। সহজভাবে আরানিয়ান বা আর্য বলতে ইন্দো-ইরানিয়ান জাতিগোষ্ঠীর মানুষকে বোঝানো হয়ে থাকে। বিভিন্ন গোত্রের মানুষ নিয়ে আর্যদের এই গোষ্ঠীগুলো তৈরি হতো। এরা এ্যালান, ব্যাকট্রিয়ান,মেডিস,পার্সিয়ান,  ইত্যাদি বিভিন্ন নামে পরিচিত হয়েছে নানা সময়।  এই গোষ্ঠীর মানুষেরা বহু ঈশ্বরবাদী এক ধর্মে বিশ্বাসী ছিল যার সাথে মিল রয়েছে Indo-Aryan জাতিগোষ্ঠীর বৈদিক ধর্মের সাথে। যারা ভারতের উত্তরাংশে বসবাস স্থাপন করেছিল। এরা ছিল অগ্নি উপাসক।

তাদের মূল ঈশ্বরকে তারা বলত আহুর মাজদা।  খ্রিস্টপূর্ব ১৫০০ থেকে ১০০০ সালের মধ্যে জরাথুস্ট্র পারস্যে জরাথুস্ট্রবাদ নামে ধর্মের প্রবর্তন করেন। এই  ধর্ম অনুসারে মানব জীবনকে একটি ঐকান্তিক সংগ্রাম হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। এই অনন্ত সংগ্রামের কেন্দ্রে রয়েছেন আহুর মাজদা-সুবিচার এবং শৃঙ্খলার ইশ্বর  এবং তার প্রতিরুপ আংরা মাইনু – বিভেদ এবং বিশৃঙ্খলার দেবতা।  এই দু’য়ের মাঝে মানুষকে  একটি পক্ষ বেছে নিতে হয়।  অনেকটা ভালো-মন্দ, শুভ-অশুভের চিরন্তন লড়াইয়েরই একটি প্রতিচ্ছবি।

প্রাচীন পারস্য সভ্যতা

পারস্যের অধিবাসীরা ইরানী মালভূমি অঞ্চলে বসবাস শুরু করে খ্রিস্টপূর্ব ১০০০ সালের দিকে । ডায়ুক্কু নামক একজন গোত্রপতি মেডিয়ান সাম্রাজ্যের লোকজনকে একতাবদ্ধ করেন এবং একবাতানে তাদের রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন।  ততদিনে ইলামাইড গোত্রের মানুষেরা  এ অঞ্চলে অনেকদিন থেকেই বসবাস করছিল এবং সম্ভবত এই এলাকায় আদিবাসি ছিল।  খ্রিস্টপূর্ব ৬৭৫ সালের দিকে পার্শিয়ানরা  তাদের রাজা থিয়েপিসের নেতৃত্বে ইলাম রাজ্যের পূর্ব দিকে অবস্থিত “পার্সিস” নামের একটি স্থানে বসবাস করতে শুরু করে। জায়গাটির বর্তমান নাম ফার্স। এই “পার্সিস” নাম থেকেই পার্সিয়ান নামটি এসেছে। যে নামে তাদের সাম্রাজ্য পরিচিত। পরবর্তীতে তারা ইলামাইট সভ্যতার লোকজনের সাথে মিশে যায়  এবং তাদের সংস্কৃতি একীভূত হয়ে যায়।  খ্রিস্টপূর্ব ৫৫০ সালের দিকে রাজা ২য় সাইরাস, যিনি “সাইরাস দ্যা গ্রেট” নামে পরিচিত ছিলেন, তিনি আকামেনিদ সম্রাজ্যের পত্তন ঘটান। তিনি ক্ষমতায় আসার পর সমস্ত পারসিয়ান শহরগুলোকে একত্রিত করে পারসিয়ান সাম্রাজ্য গঠন করেন এবং প্রাচীন ব্যবিলনকে জয় করতে অভিযানে নামেন। তিনি এতো বেশি রাজ্য জয় করেন যে ৫৩৩ খ্রিস্ট পূর্বের শেষের দিকে ভারতের পুবের অঞ্চলগুলো তার দখলে আসে।পরবর্তীতে সাইরাস মারা যাওয়ার পরেও তার বংশধরেরা তাদের জয় বজায় রাখে এবং সাহসী স্পার্টানদের সাথেও তারা ঐতিহাসিক যুদ্ধ করে। ক্ষমতার শীর্ষে এসে পারসিয়ানরা মধ্য এশিয়া,ইউরোপ এবং মিশরের কিছু অংশে সাম্রাজ্য বিস্তার করে।পরবর্তীতে এদের পরাজিত করে ক্ষমতায় আসেন আলেকজেন্ডার দ্যা গ্রেট  এবং পারসিয়ানদের পতন ঘটে।

তারপর একে একে ক্ষমতায় এসেছে সেলুসিড সাম্রাজ্য, পার্থিয়া এবং সাসানিয়ান সাম্রাজ্য। সপ্তম শতাব্দীতে সাসানিয়ান সাম্রাজ্যকে হটিয়ে পারস্যের নিয়ন্ত্রণ আসে আরবের মুসলমান শাসকদের হাতে।

সভ্যতার ইতিহাস বিষয়ে আরো জানতে এখানে ক্লিক্ করুন…

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

istanbul escorthacklink satın alporno izleizmir escorteryaman escortankara escortGaziantep escortonwin girişHacklink satın alTavşanlı escortGiresun escortizmir escortankara escortkayseri escort