আসছে বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতগতির জেট বিমান!

দ্রুতগতির জেট বিমান

বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতগতির জেট বিমান!

দ্রুতগতির জেট বিমান

সোভিয়েত ইউনিয়নের আকাশে ৮৫ হাজার ফুট উচ্চতায় উড়ছে একটি মার্কিন গোয়েন্দা বিমান নিখুঁতভাবে তুলে নিল রাস্তার অত্যন্ত দ্রুতগতিতে চলতে থাকা একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির গাড়ির নাম্বার প্লেটের ছবি।  শত্রু  বিমান অনুপ্রবেশের বিষয়টি টের পেয়ে মিসাইল ছুড়লো সোভিয়েত এয়ার ডিফেন্স ব্রিগেড (Soviet Air Defense Bridged)  ।  আকাশে উড়লো সুপারসনিক (Super Sonic) যুদ্ধবিমান কিন্তু কেউই ঐ কালো পাখিটির নাগাল  পেল না । কেননা ঐ বিমানের গতিতে মিসাইলের চেয়েও বেশি। এটি  বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতগতির বিমান । যার ২৪ বছরের সার্ভিস লাইফে চার হাজারের বেশি মিসাইল ধাওয়া করেও কখনো ধরতে পারেনি ।

দ্রুতগতির জেট বিমান

১৯৬৪ সালে তৈরি হয় রিগানসিচ  বিমান  SR-71 । মার্কিন বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান লকহিড কর্পোরেশন (Lockheed Corporation) এর  তৈরি এই বিমানের ডাকনাম ছিল “ব্ল্যাকবার্ড”(Black Bird)। যা শব্দের গতির ৩.২ গুন গতিতে ছুটতে সক্ষম ছিল।  যে দ্রুতগতির জেট ইঞ্জিন চালিত বিমান পৃথিবীতে আর একটিও তৈরি হয়নি। এস আর-৭১ মার্কিন এয়ারপোর্ট থেকে অবসর নেয়ার পর নাসার মহাকাশ গবেষণা প্রোগ্রামেও ভূমিকা রেখেছিল ইঞ্জিনিয়ার ক্লেয়ার জনসন (Claire Johnson) এই অদ্ভুত বিমান  তৈরি করেন।  তার টার্গেট ছিল এমন হাইব্রিড ইন্টারসেপ্টে বিমান তৈরি করা যা কিনা রাডারে সহজে ধরা পড়বে না । কিন্তু এর ফিল্ড পারফর্মেন্স দেখা গেল এটি ইন্টারসেপ্টর চেয়ে রিকনিসেন্স (Reconnaissance aircraft) অর্থাৎ গোয়েন্দা হিসেবে ভালো কাজ করবে। ফলে এই বিমানের নকশার উপর ভিত্তি করে A-12 রিকনিসেন্স বিমান বানানো হয়।

দ্রুতগতির জেট বিমান

এতে একজন পাইলট দরকার হতো তাই মার্কিনীরা পাইলটের ঝুঁকি কমাতে D-21  নামক একটি সুপারসনিক ড্রোন তৈরি করে।  যা মূলত A-12 এর বামন ভার্সন । এই ড্রোন ঘন্টায় ৩ হাজার ৬০০ কিলোমিটার বেগে উড়ে ছবি তোলার কাজ শেষে নিজে নিজেই ধ্বংস হয়ে যেত।  কিন্তু ড্রোনগুলো একবারের বেশি ব্যবহার সম্ভব না বিধায় খরচ বেড়ে যাচ্ছে তাই SR-71 নামের সম্পূর্ণ নতুন মডেলের বিমান এর প্রজেক্ট হাতে নেয়া হয়।

দ্রুতগতির জেট বিমান

 

SR-71 সাড়ে ৩ হাজার পাউন্ড ওজনের ক্যামেরা এবং অন্যান্য রিকনিসেন্স পে-লোড (Reconnaissance payload)  বহন করতে পারতো। এটি খুবই নিখুত ভাবে ছবি তুলতে পারত।  মাত্র  এক ঘন্টায় ১ লাখ বর্গমাইল এলাকা সার্ভে করতে পারত বিমানটি।ব্লাক বার্ডের ক্যামেরা এতটায় আধুনিক ছিল যে রাস্তায় ঘণ্টায় ২০০ কিলোমিটার গতিতে চলতে থাকা গাড়ির নাম্বার প্লেটের ছবি ৮৫ হাজার ফুট উচ্চতা থেকে নিখুঁতভাবে তোলা সম্ভব।  তখনকার যুগে জিপিএস প্রযুক্তি ছিল না আবার ৩৩ হাজার ফুট উচ্চতায় কম্পাস ভিত্তিক নেভিগেশন সিস্টেম পৃথিবীর ম্যাগনেটিক ফিল্ডের কারণে ভুল রিডিং দিত। তাই আকাশের তারা দেখে পথ চলতো SR-71 এ  ব্যবহার করা হয়েছে অ্যাস্ট্রো এনারশিয়াল নেভিগেশন সিস্টেম (Astro inertial navigation system) এই  সিস্টেম  আকাশের ১০০টিরও বেশী  তারার অবস্থান নির্ণয় করে সঠিকভাবে বিমান চালাতে সহায়তা করত।

SR-71 এর বডি ৮৫% টাইটেনিয়ামের তৈরী।  ফলে এটি নির্মাণের সময়ের যোগানের তুলনায় প্রচুর চাহিদার সৃষ্টি হয়।  তৎকালীন এই মূল্যবান ধাতুর প্রধান রপ্তানিকারক ছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন কিন্তু “ব্লাক বার্ড”  একটি গোপনীয় প্রজেক্ট এত বিপুলসংখ্যক টাইটেনিয়াম কিনতে গেলে সন্দেহ করবে সোভিয়েত গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবি। তাই মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ (CIA) দেশে-বিদেশে বেশ কিছু ভুয়া কোম্পানি তৈরি করে এদের মাধ্যমে সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে কেনা ধাতু দিয়ে এমন বিমান তৈরি করে যা তাদের উপরেই গোয়েন্দাগিরির কাজ করতো।

তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের মিসাইলের সাধ্য ছিল না একে ভূপাতিত করার।  ১৯৮৭  সালের লিবিয়ার আকাশে মিসাইল ফাঁকি দেয়ার সময় একটি Black-Bird MiG অতি উচ্চমাত্রার গতি তুলে বিশ্ব রেকর্ড গড়ে।  মোট ৩২টি ব্ল্যাকবার্ড বানানো হয়েছিল।  যার বারোটি বিভিন্ন দুর্ঘটনায় ধ্বংস হয় তবে একটি শত্রূর হাতে ধ্বংস হয়নি । ১৯৭৪ সালে মাত্র এক ঘণ্টা ৫৫ মিনিটে নিউইয়র্ক থেকে লন্ডনে উড়ে গিয়েছিল একটি ব্ল্যাকবার্ড। তৎকালে কনকর্ড সুপারসনিক যাত্রীবাহী বিমান একই পথে প্রায় ৩ ঘন্টা সময় নিত। অতি উচ্চতায় অতি উচ্চ গতিতে চলার কারণে black-bird পাইলটদের নভোচারীদের মতো এয়ারপ্রেসার স্যুট পরিধান করতে হতো যা ককপিটে প্রেসার নিয়ন্ত্রণ সিস্টেমের সাথে সম্পর্কযুক্ত থাকতো।

SR-71  ছিল প্রথম যুগের স্টেলথ বিমান। এর রাডার ক্রস সেকশনের মান দশ স্কয়ার মিটার।  আজকের যুগে এটি সাধারন ব্যাপার হলেও ৫০ বছর আগে এটিই ছিল বিস্ময়! আধুনিক যুগের ড্রোন ও স্পাই সেটেলাইটের যুগে এই  বিমানের চাহিদা শেষ হয়ে গেছে এমনটি ভাবার কোন কারণ নেই যুক্তরাষ্ট্র বহু আগে থেকেই ব্ল্যাকবার্ড এর উত্তরসরী SR-72 নিয়ে কাজ করছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ২০২৫ সালে এটি আকাশে উড়বে । তবে ব্ল্যাকবোর্ড  ছিল তার যুগের তুলনায় কয়েকগুন এগিয়ে থাকা কিংবদন্তী।

এর সমতুল্য বিমান আজ অবধি কোন দেশ বানিয়ে দেখাতে পারেনি একে এভিয়েশন ইঞ্জিনিয়ারিং জগতের বিশ্বয় হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।

দ্রুতগতির জেট বিমান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


hacklink satın alporno izleizmir escorteryaman escortGaziantep escortonwin girişTavşanlı escortGiresun escortankara escortkayseri escorteryaman escortsweet bonanza oynaPendik Escortistanbul escortanadolu yakası escorthalkalı escortmaltepe escortKurtkoy Escortyeşilköy escortYeşilköy otele gelen escortflorya eve gelen escortFlorya Kolombiya Escortgenç escort yeşilköyOtele Gelen Escort Yeşilköybeylikdüzü escortbuca escortfethiye escortısparta escortEscort BayanTürkiye Escort, Escort Bayanmarmaris escortBahçeşehir escortizmir escortBursa EscortSlot bonusu veren sitelerdeneme bonusu veren sitelerSütunlar güncellendi.
Twitter Takipçi Satın AlKartal evden eve nakliyatimplantantalya haberkeçiören evden eve nakliyatDeselerMasal OkuMasallar OkuNasrettin Hoca FıkralarıMasallarMasallarİstanbul mevlid lokmasıankara evden eve nakliyatİstanbul izmir evden eve nakliyatmamak evden eve nakliyatEtimesgut evden eve nakliyattuzla evden eve nakliyateskişehir uydu tamirankara parca esya tasımaSütunlar güncellendi.