জাতিসংঘে বাংলাদেশ
History

জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার প্রয়োজন কেন হয়েছিল

Pathokia 

জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার প্রয়োজন কেন হয়েছিল

জাতিপুঞ্জ ( League of Nations )  সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যঃ 

জাতিপুঞ্জ বা লিগ অব নেশনস ( Leagua of Nations ) প্রথম বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী একটি আন্তর্জাতিক আন্ত: শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য। ১৯১৯ সালে প্যারিস শান্তি আলোচনার ফলস্বরূপ সংস্থাটির জন্ম। এর সদর দপ্তর ৩টি যথা: (১) অ্যাসেম্বলি। (২) কাউন্সিল‌। (৩) সচিবালয়। এ লীগ অব নেশনস এর প্রথম কাউন্সিলর অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয় ১৯২০ সালের ১৬ জানুয়ারি এবং প্রথম অ্যাসেম্বলি অধিবেশন বসে ১৯২০ সালের ১৫ নভেম্বর।

যুক্তরাষ্ট্রের ২৮ তম প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসন ১৪ দফার ভিত্তিতে জাতিপুঞ্জ গঠনের প্রস্তাব করেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এড়াতে ব্যর্থ হওয়ায় ১৯৪৬ সালের ২০ এপ্রিল সংস্থাটি বিলুপ্ত হয়। সংস্থাটি মাত্র ২৭ বছর টিকে ছিল। সংস্থাটির উত্তরসূরি হিসেবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জাতিসংঘের জন্ম হয়। জাতিপুঞ্জ গঠনের সময় ৪২টি দেশ উপস্থিত ছিল। জাতিপুঞ্জের প্রথম সেক্রেটারি জেনারেল ছিলেন ব্রিটিশ পদস্থ রাজকর্মচারী স্যার এরিক ড্রামন্ড।

সংস্থাটির বিলুপ্তির সময় উপস্থিত সদস্য দেশ ছিল ৩৪ টি।
উড্রো উইলসনের ১৪ দফার গুরুত্বপূর্ণ কিছু দফা আলোচনা করা হলোঃ
দফা – (১) :- কোন গোপন চুক্তিকে সন্ধির শর্ত হিসেবে গ্ৰহণ করা যাবে না।
দফা – (২) :- ক্ষুদ্র ও বৃহৎ সকল রাষ্ট্রের রাজনৈতিক স্বাধীনতা ও রাজ্যসীমার নিরাপত্তা রক্ষা এবং আন্তর্জাতিক বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য বিভিন্ন জাতির সমন্বয়ে একটি বিশ্ব সংস্থা গঠন করতে হবে।

জাতিসংঘ ( UNITED NATIONS ) সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যঃ 

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহ ধ্বংস লীলা বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য দারুণভাবে ভাবিয়ে তোলে। তাই বিশ্বের নেতৃবৃন্দ আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে ১৯৪৫ সালের ২৪ অক্টোবর জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠা করে। জাতিসংঘ সনদ গৃহীত হয় ১৯৪৫ সালের ২৬ জুন। জাতিসংঘ নামটি সর্বপ্রথম ব্যবহার করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট রুজভেল্ট ( ১ জানুয়ারি ১৯৪২ )। জাতিসংঘের ( আয়ের উৎস সদস্য দেশগুলোর চাঁদা ) বৃহত্তম চাঁদা প্রদানকারী দেশ যুক্তরাষ্ট্র ( বাজেটের ২২ শতাংশ )। জাতিসংঘের বাজেট ঘোষিত হয় দুই বছর পর পর। জাতিসংঘে বাংলাদেশের চাঁদার পরিমাণ বাজেটের ০.০১%।

জাতিসংঘের সদস্য

বর্তমান জাতিসংঘের সদস্য সংখ্যা ১৯৩ টি। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য ৫টি। সেগুলো হলো- যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া, ফ্রান্স ও চীন। এ ৫টি দেশের রয়েছে ভেটো প্রদানের ক্ষমতা। নিরাপত্তা পরিষদে ১০টি অস্থায়ী সদস্য রয়েছে, যারা দুই বছরের জন্য নির্বাচিত হন। এছাড়াও জাতিসংঘের স্থায়ী পর্যবেক্ষক দেশ ফিলিস্তিন ও ভ্যাটিকান সিটি। জাতিসংঘের সবচেয়ে ক্ষুদ্র সদস্য রাষ্ট্র মোনাকো। উল্লেখ্য, তাইওয়ান জাতিসংঘের পূর্বে সদস্য ছিলো কিন্তু বর্তমানে সদস্য নেই। বাংলাদেশ জাতিসংঘের ১৩৬ তম সদস্য।

জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠা

জাতিসংঘের প্রতীকঃ 

জাতিসংঘের পতাকায় আছে হালকা নীলের উপর সাদা রঙের জাতিসংঘের প্রতীক। জাতিসংঘের প্রতীকের মাঝখানে পৃথিবীর মানচিত্র, দুইপাশে দুইটি জলপাই গাছের পাতা। জলপাই গাছ শান্তির প্রতীক। ১৯৪৭ সালের ২০ অক্টোবর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে এ পতাকা অনুমোদন পায়।

মানবাধিকার কমিশনঃ 

১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে সর্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণা দেয়া হয় এবং একটি সনদ স্বাক্ষরিত হয়। সনদের ভিত্তিতে মানবাধিকার কমিশন গঠিত হয়। প্রতিবছর ১০ ডিসেম্বর মানবাধিকার দিবস পালিত হয়।

জাতিসংঘের সদর দপ্তরঃ

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের East River নদীর তীরে জাতিসংঘের সদর দপ্তর অবস্থিত।

জাতিসংঘের ভাষাঃ

জাতিসংঘ বা রাষ্ট্রসংঘের ছয়টি দাপ্তরিক ভাষা হলো ৬টি যথা: আরবি, চীনা, ইংরেজি, ফরাসি, রুশ এবং স্পেনীয় ভাষা। জাতিসংঘ সচিবালয়ে যে দুটি ভাষা ব্যবহৃত হয় তা হলো ইংরেজি ও ফরাসি।

জাতিসংঘের উদ্দেশ্যঃ

জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য হলো যুদ্ধ বন্ধ এবং যুদ্ধোত্তর পৃথিবীতে শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। এছাড়া শান্তিপূর্ণ উপায়ে যে কোন সমস্যার সমাধানের মাধ্যমে যুদ্ধের সম্ভাবনা রহিত করা; বিশ্বে সুষম উন্নয়ন এবং মানবাধিকার নিশ্চিত করা।

সাংগঠনিক ভাবে জাতিসংঘ বা রাষ্ট্রসংঘের প্রধান অঙ্গ সংস্থা ঃ

জাতিসংঘের মূল অঙ্গসংস্থা ৬টি তবে বর্তমানে ৫টি শাখা কার্যকর রয়েছে এবং ১ টি শাখা অকার্যকর রয়েছে

নিরাপত্তা পরিষদ (Security Council), সাধারণ পরিষদ (General Assembly), অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদ( Economic and Social Council), অছি পরিষদ (Trusteeship Council) ১৯৯৪ সালে পালাউ স্বাধীন হলে জাতিসংঘের এই সংস্থাটি স্থগিত করা হয় ।, সচিবালয় (UN Secretariat) ও আন্তর্জাতিক আদালত (International Court of Justice)।

ইতিহাস বিষয়ে আরো জানতে এখানে ক্লিক্ করুন…

Recommended Posts

বাংলাদেশের ঐতিহাসিক মসজিদ
World Heritage Bangladesh

ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন মসজিদ

মুসলমানদের তথা মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র উপসনালয় মসজিদ। বাংলাদেশ মুসলিম সংখ্যা গরিষ্ঠ দেশ হলেও এখানকার ইসলামের ইতিহাস তেমন পুরাতন নয়। বাংলাদেশে কিছু প্রাচীন মসজিদ ছাড়া মোঘল আমলের পূর্বের প্রায় সকল প্রাচীন মসজিদ ই ধ্বংস হয়ে গেছে। আজ আমরা তেমনই কিছু ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন মসজিদ সম্পর্কে জানবো। সিংগাইর মসজিদঃ মধ্যযুগীয় এই সিংগাইর মসজিদটি ষাটগম্বুজ মসজিদের দক্ষিণ-পূর্ব কোনে অবসিহত। […]

Pathokia 

গেঁটেবাত থেকে মুক্তির উপায়

গেঁটেবাত থেকে মুক্তির উপায় শতাধিক প্রকারের বাতরোগের মধ্যে রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস বা গেঁটেবাত অন্যতম। সাধারণত বয়স্করা এ রোগে আক্রান্ত হয়।কম বয়সী ছেলেমেয়েদের বেলায় গিঁটে ব্যথা বা যন্ত্রনা হওয়া রিউমেটিক ফিভার বা বাতজ্বর ( Rheumatic Fever ) জাতীয় অন্য রোগের লক্ষণ হতে পারে। মানব শরীরে রক্তের সঙ্গে ইউরিক অ্যাসিড (Uric Acid) নামে এক ধরনের উপাদান থাকে, যার […]

Pathokia 
Artimis:NASA’s Mega Moon Rocket
Science and Technology

আর্টেমিস : আবারও চাঁদের বুকে মানুষ

আর্টেমিস :আবারও চাঁদের বুকে মানুষ Artimis:NASA’s Mega Moon Rocket দীর্ঘ পাঁচ দশক পর আবারও চাঁদের বুকে মানুষ পাঠানোর অভিযানে নাসা। তিন ধাপের মিশনে মনুষ্যবিহীন প্রথম রকেট টি ২৯ আগস্ট যাওয়ার কথা ছিল। আর শেষ ধাপে পাঠানোর কথা ছিল মানুষ। এর মাধ্যমে শুরু হতে যাচ্ছিল বহুল প্রতীক্ষিত আর্টেমিস যুগের। ফ্লোরিডার কেপ কেনেডি স্পেস সেন্টারে (Kennedy Space […]

Pathokia