চিকিৎসা শাস্ত্রে আল রাজির অবদান
History

চিকিৎসা বিজ্ঞানী আল রাজি

Pathokia 

চিকিৎসা শাস্ত্রে আল রাজির অবদান:

আল রাজী আরবীয় চিকিৎসাশাস্ত্রের অন্যতম দিকপাল হিসেবে  যিনি সারা বিশ্বে খ্যাতি অর্জন করেছেন তার পুরো নাম আবু বকর মোহাম্মদ ইবনে জাকারিয়া আল রাজি। যদিও আল রাজি বা আর রাজী নামেই বেশি পরিচিত তিনি। ইউরোপে আল রাজেস নামে পরিচিত তিনি।তিনি একই সাথে চিকিৎসক, চিকিৎসা বিজ্ঞানী, দার্শনিক, জ্যোতির্বিজ্ঞানী, রসায়নবিদ এবং ঔষধ ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ একজন ব্যক্তিত্ব। এছাড়াও বিশ্বের সেরা মনীষীদের একজন হিসেবে অভিহিত হন এই চিকিৎসা বিজ্ঞানী।

জন্ম ও জন্মস্থান পরিচিতিঃ

৮৬৫ খ্রিস্টাব্দে (২৫১ হিজরী) পারস্যের “রে” নগরীতে জন্মগ্রহণ করেন আল-রাজী। আল ব্রুজ  পর্বতমালার দক্ষিণের ঢালে  বিখ্যাত সিল্ক রোডের পাশে এই নগরীটি অবস্থিত। বর্তমানে বৃহত্তর তেহরানের অংশ।

আল রাজীর অবিশ্বরনীয় কর্মকালঃ

আল-রাজী ছিলেন তাঁর সময়ের মুসলিম জগতের সর্বশ্রেষ্ঠ চিকিৎসক। জ্ঞান রাজ্যের অন্যান্য শাখাতেও তিনি অভিজ্ঞতা অর্জন করেছিলেন। আল-রাজী প্রথম জীবনে সঙ্গীত ও শিল্পকলার আগ্রহী ছিলেন। প্রথমদিকে বিজ্ঞানের প্রতি তার তেমন আগ্রহ ছিল না। ঘটনা বৈচিত্র আর প্রয়োজনের তাগিদে এই বিষয়টি নিয়ে ধীরে ধীরে আগ্রহী হন। তারপর রসায়ন জ্যোতির্বিদ্যা, দর্শন, গণিত প্রভৃতি বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করেন। প্রত্যেকটি বিষয়ে তিনি সমান পারদর্শিতা দেখিয়েছেন।

এরপর চিকিৎসক ও বিজ্ঞানী হিসেবে অসামান্য প্রতিভার পরিচয় দিয়ে দেশ-বিদেশে খ্যাতি অর্জন করেন। চিকিৎসা শাস্ত্রে মুসলমান বিজ্ঞানীদের অবদান এর কথা বলতে গেলে প্রথমেই বলতে হয় আল-রাজীর কথা। ধারণা করা হয় তার বয়স যখন ত্রিশ বা চল্লিশের কোঠায় ছিলো তখন তিনি মেডিসিনে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। চিকিৎসা বিজ্ঞানে তাঁর অবদান বিবেচনা  করে তাকে চিকিৎসাবিদ ইবনে সিনার সাথে তুলনা করা হয়। চিকিৎসাশাস্ত্রের দীক্ষা নিতে তিনি বাগদাদে যান এবং সেখানেই এই বিষয়ে পড়াশোনা করেন।

পরবর্তীতে সেখানেই এক স্থানীয় হাসপাতালের চিকিৎসক হিসেবে যোগদান করেন। এরপর রে-এর গভর্নর মানসুর ইবনে ইসহাক তাকে “রে” শহরে ফিরে আসার আমন্ত্রণ জানান এবং রাজকীয় রে-হাসপাতালের প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেন।  চিকিৎসক হিসেবে সুনাম অর্জন করেন আল-রাজী। ফলে বাগদাদ থেকে আব্বাসীয় খলিফা আল মুক্তাদির তাকে আমন্ত্রণ জানান এবং নতুন স্থাপিত একটি হাসপাতালের প্রধানের দায়িত্ব প্রদান করেন। তিনি চিকিৎসাবিদ্যায় এতই খ্যাতি অর্জন করেন যে তাকে বিভিন্ন দেশের শাসনকর্তা রাজা-বাদশাদের চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন দেশে আমন্ত্রণ জানানো হতো। তিনি প্রথম চিকিৎসক যিনি হাম এবং গুটি বসন্ত কে আলাদা করে রোগ হিসেবে চিহ্নিত করেন। এর আগে এই দুটো রোগকে আলাদা ভাবা হতো।  এছাড়াও পেডিয়াট্রাইক্স অফ থালমোলজি, নিউরোসার্জারি সংক্রামক রোগ সহ চিকিৎসা বিদ্যার শাখার গোড়াপত্তন করেন তিনি। আল রাজীব দা ডিজিজ অফ চিল্ড্রেন বইটি পেডিয়াট্রাইক্স  চিকিৎসাবিদ্যার স্বতন্ত্র একটি শাখা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে।

চোখ নিয়ে ব্যাপক গবেষণা করার কারণে চক্ষু রোগ চিকিৎসার পথপ্রদর্শক বলা হয়ে থাকে তাকে। চোখের রেটিনার যে দশটি লেয়ার আছে তা তিনিই প্রথম আবিষ্কার করেন। চিকিৎসা বিজ্ঞানের উপর অনেকগুলো ভলিউম এর দশটিরও বেশী গ্রন্থ আছে তার। অনুবাদ এর বদৌলতে তার চিকিৎসা বিদ্যা সংক্রান্ত গ্রন্থাবলী এবং ধ্যান-ধারণা মধ্যযুগের ইউরোপে ছড়িয়ে পড়েছিল এবং তাঁর রচিত বেশ কিছু বই পাশ্চাত্যের চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পাঠ্যবই হিসেবে পড়ানো হতো। আল-রাজীর রচিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হচ্ছে আল কিতাব আল হাওয়ী, দি ভারচুয়ালস লাইফ, আল জুদারী আল হাজবা, দ্যা ইসপিরিচ্যুয়াল ফিজিক্স, আল মানসুরী প্রভৃতি। ২৩টি ভলিয়মে  রচিত আল কিতাব আল হাউয়ী, গাইনোকোলজি  অন সার্জারি, অবথেরমিক সারজারীর ভিত্তি প্রতিষ্ঠা করে। দি ভারচুয়ালস লাইফ বইটি বিভিন্ন বই পড়ে অর্জিত জ্ঞান নানা রকম রোগ এবং তার চিকিৎসা নিয়ে তার পর্যবেক্ষণসহ তার রাখা সমস্ত নোটকে একত্রিত করে তৈরি করেছেন তিনি শুধু এই বইটির জন্য।

যুগের শ্রেষ্ঠ চিকিৎসকঃ

চিকিৎসা শাস্ত্রে আল রাজির অবদান

অনেক পণ্ডিত তাকে মধ্যযুগের শ্রেষ্ঠ চিকিৎসক হিসেবে আখ্যায়িত করেন। এছাড়াও চিকিৎসাশাস্ত্রের নৈতিকতা নিয়েও কাজ করেছেন তিনি। সেসময় শহরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ভুয়া ডাক্তারের দমন করেন।  তিনি গরীব অসহায় ও মুসাফির লোকদের জন্য প্রাথমিক চিকিৎসা সংক্রান্ত বই লেখেন, যাতে করে তারা ডাক্তারের কাছে যেতে না পারলেও নিজেদের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে পারে।  খলিফা আল মুতাদিদের শাসন আমলে আল-রাজী আব্বাসীয় খেলাফতের সবচেয়ে বড় হাসপাতাল নির্মাণের দায়িত্ব পান।  হাসপাতাল নির্মাণের স্থান নির্বাচন করতে তিনি এক অভিনব প্রক্রিয়া সাহায্য নেন।  পুরো শহর জুড়ে নানা জায়গায় তিনি মাংসের কিছু টুকরা রেখে আসেন,  যে স্থানের মাংস সবচেয়ে পরে পচতে শুরু করেছিল সেই স্থানটি হাসপাতাল নির্মাণের জন্য নির্ধারণ করেন তিনি। তাঁকে ডক্টর অব ডক্টর প্যাডিয়াট্রিকের পিতা এবং অস্থি বিজ্ঞানের অগ্রদূত হিসেবে অভিহিত করা হয়। এছাড়াও সাইকোলজির জনক, সাইকোথেরাপির জনক, শিশু রোগ চিকিৎসার জনক, এমন অসংখ্য উপাধিও আছে এই জ্ঞান সাধকের।

রসায়নশাস্ত্রের অন্যতম প্রবর্তকঃ

রসায়নশাস্ত্রে অনেক নুতন বিষয়ের প্রবর্তন করায় বর্তমান দর্শনশাস্ত্রের অন্যতম প্রবর্তক হিসেবে বিবেচনা করা হয় আল-রাজীকে। এর মধ্যে বিভিন্ন প্রতীক এবং চিহ্ন অন্যতম। তিনি একই সাথে জৈব ও অজৈব রসায়ন নিয়ে কাজ করেছেন।  তিনি অ্যালকোহল অন্যান্য অনেক যৌগ এবং রাসায়নিক পদার্থ আবিষ্কার করেছেন। যার মধ্যে অন্যতম হলো কেরোসিন। ৯ শতকে  তিনি তার বই কিতাব আল আসরারে কেরোসিন উৎপাদনের দুটি পদ্ধতির কথা লিখেন।  উল্লেখ্য প্রথম সালফিউরিক এসিড আবিষ্কার এবং তৈরি করেন আল রাজি।  এর পাশাপাশি অসংখ্য লবণ, এলাম প্রভৃতি তৈরি করেছেন তিনি। এছাড়াও ইথানল উৎপাদন এবং চিকিৎসায় এর ব্যবহার প্রক্রিয়া আবিষ্কার করেন তিনি।  নানারকম রাসায়নিক প্রক্রিয়া এবং যন্ত্রপাতিও তিনি উদ্ভাবন করে গেছেন।  যার মধ্যে একটি অন্যতম আবিষ্কার কেরোসিন ল্যাম্প। আল-রাজী ধাতু রুপান্তরে বিশ্বাসী ছিলিন। মধ্য যুগের অন্যান্য রসায়নবিদের মতই  তিনিও বিশ্বাস করতেন পরশপাথর সাহায্যে সাধারন ধাতুকে স্বর্ণে রূপান্তর করা সম্ভব। পরশপাথরের সন্ধানে তিনি অনেক সময় ব্যয় করেছেন এবং এই সময়ে দি সিক্রেটস্ এবং দি সিক্রেটস্আব দি সিক্রেটস্ নামে দু’টি বইও  লিখেছেন। তাঁর সমসাময়িক পন্ডিতদের ধারণা তিনি নাকি কপারকে স্বর্ণে রুপান্তর  করতে পেরেছিলেন।  এছাড়াও রসায়নের আরো অনেক বই লিখে গেছেন তিনি।

জ্যোতির্বিজ্ঞান ও জ্যোমিতির উপরেও  তিনি  কিছু বই লেখেন । বল বিজ্ঞানে ওজন সম্পর্কিত নিজামতারি নামে তার একটি বইয়ের সন্ধান পাওয়া যায়। পদার্থ ও আলোকবিজ্ঞান সম্পর্কেও তিনি বই লিখেন। যার বহুসংখ্যক এখন বিলুপ্ত হয়ে গেছে।

এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা(১৯১১) অনুসারে তিনি অন্যতম একটি সংক্রামক রোগের মধ্যে পার্থক্য করার জন্য কোয়ান্টাম তত্ত্ব ব্যবহার করেন এবং শ্লেটোকক্স এবং হামের রোগীদের ক্লিনিকালিয় চরিত্রায়ন সম্পর্কে একটি অগ্রগামী বই লিখেছেন। এডওয়ার্ড গ্রান্ডভিল ব্রাউন তাকে সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সর্বাধিক মুসলিম চিকিৎসক ও একজন লেখক হিসেবে সবচেয়ে উজ্জ্বল বলে মনে করেন। তিনি তাঁর জীবনদ্দশায় মোট ২৩৭ টি বই রচনা করেছেন। রচিত বইগুরোর বেশীর ভাগই কালের আবর্তে হারিয়ে যায় কিন্ত আজও ৩৬টি বই টিকে আছে। তিনি চিকিৎসাবিজ্ঞান আলকেমি, পদার্থবিজ্ঞান এবং অন্যান্য বিষয়ের উপর ১৮৪টিরও বেশী বই লিখেছেন। শিক্ষক হিসেবেও তাঁর খ্যাতি ও গ্রহণযোগ্যতা ছিল। তার লেকচারের আকর্ষণে দূর-দূরান্ত থেকে অনেক শিক্ষার্থী এসে তার ক্লাসের ভিড় জমাতো। মানুষ হিসেবে তিনি ছিলেন  মহৎ এবং উদারমনা। তিনি দরিদ্র রোগীদের ফ্রি চিকিৎসা দান করতেন।বাগদাদ নগরীতে তাঁর একটি পরিক্ষাগার ছিল।  তার নামে ইরানে রাজী ইনস্টিটিউট এবং রাজী বিশ্ববিদ্যালয় অবস্থিত।  ইরানের প্রতি বৎসর ২৭ আগস্ট রাজি দিবস পালন করা হয়।

উপসংহারঃ

৩০ বছর বয়সে আল রাজীর চোখে ছানি পড়ে এবং পরবর্তীতে তিনি গ্লুকোমা নামে একটি চোখের রোগে আক্রান্ত হন। চোখ সম্পর্কে সে সময় তাঁর চেয়ে বেশী আর কেউ জানে না। তবে চোখ সম্পর্কে জানা আর চোখের চিকিৎসা দু’টি ভিন্ন জিনিষ। বলা হয়ে থাকে যে চিকিৎসকই তাঁর চিকিৎসা করতে চাইতেন তাকেই জিজ্ঞেস করতেন রেটিনা স্তর কয়টি, কেউই তখন তা বলতে পারতো না। ফলে যে চিকিৎসক রেটিনা স্তর কয়টা জানে না সে তার চোখের চিকিৎসা কিভাবে করবে  বলে তিনি চিকিৎসা নিতে অনাগ্রহ দেখিয়েছেন।

ফলশ্রুতিতে তিনি পরে অন্ধ হয়ে যান। যদিও কেউ কেউ বলেন তার চোখে কোন রাসায়নিক পদার্থ পড়েছিল বলে তিনি অন্ধ হয়ে যান।  আবার অনেকেই মনে করেন আল-রাজী নাকি রাসায়নিক কোন এক পরীক্ষা প্রমাণ করতে পারেননি এই অপরাধে তাকে ইবনে ইসহাক অন্ধ করে দেন। তাই অন্ধত্বের কারণটি ধোয়াসাতেই রয়ে গেছে।  ৯২৫ খ্রিস্টাব্দে ৬০  বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন অসামান্য প্রতিভার অধিকারী এই ব্যক্তি। বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় গৌরবময় অবদানের জন্য তিনি পৃথিবীর ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন ।

মুসলিম বিজ্ঞানী আল-বিরুনী কে ছিলেন জানতে এখানে ক্লিক করুণ…

Recommended Posts

বাংলাদেশের ঐতিহাসিক মসজিদ
World Heritage Bangladesh

ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন মসজিদ

মুসলমানদের তথা মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র উপসনালয় মসজিদ। বাংলাদেশ মুসলিম সংখ্যা গরিষ্ঠ দেশ হলেও এখানকার ইসলামের ইতিহাস তেমন পুরাতন নয়। বাংলাদেশে কিছু প্রাচীন মসজিদ ছাড়া মোঘল আমলের পূর্বের প্রায় সকল প্রাচীন মসজিদ ই ধ্বংস হয়ে গেছে। আজ আমরা তেমনই কিছু ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন মসজিদ সম্পর্কে জানবো। সিংগাইর মসজিদঃ মধ্যযুগীয় এই সিংগাইর মসজিদটি ষাটগম্বুজ মসজিদের দক্ষিণ-পূর্ব কোনে অবসিহত। […]

Pathokia 

গেঁটেবাত থেকে মুক্তির উপায়

গেঁটেবাত থেকে মুক্তির উপায় শতাধিক প্রকারের বাতরোগের মধ্যে রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস বা গেঁটেবাত অন্যতম। সাধারণত বয়স্করা এ রোগে আক্রান্ত হয়।কম বয়সী ছেলেমেয়েদের বেলায় গিঁটে ব্যথা বা যন্ত্রনা হওয়া রিউমেটিক ফিভার বা বাতজ্বর ( Rheumatic Fever ) জাতীয় অন্য রোগের লক্ষণ হতে পারে। মানব শরীরে রক্তের সঙ্গে ইউরিক অ্যাসিড (Uric Acid) নামে এক ধরনের উপাদান থাকে, যার […]

Pathokia 
Artimis:NASA’s Mega Moon Rocket
Science and Technology

আর্টেমিস : আবারও চাঁদের বুকে মানুষ

আর্টেমিস :আবারও চাঁদের বুকে মানুষ Artimis:NASA’s Mega Moon Rocket দীর্ঘ পাঁচ দশক পর আবারও চাঁদের বুকে মানুষ পাঠানোর অভিযানে নাসা। তিন ধাপের মিশনে মনুষ্যবিহীন প্রথম রকেট টি ২৯ আগস্ট যাওয়ার কথা ছিল। আর শেষ ধাপে পাঠানোর কথা ছিল মানুষ। এর মাধ্যমে শুরু হতে যাচ্ছিল বহুল প্রতীক্ষিত আর্টেমিস যুগের। ফ্লোরিডার কেপ কেনেডি স্পেস সেন্টারে (Kennedy Space […]

Pathokia