ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ
World Heritage India

ভারতের ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট

Pathokia 

ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট ভারত (১৯৮৩-১৯৮৬)

ইউনেস্কো (UNESCO) বিশ্বের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলিকে কয়েকটি বিশেষ বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবে অনুমোদন দেওয়া হয় । ভারতের তাজমহল, আগ্রা ফোর্ট, ইলোরা গুহা, অজন্তা গুহা, কোর্ণাক সূর্য মন্দির, কাজীরাঙ্গা জাতীয় উদ্যান, মানস বন্য প্রাণী অভয়ারন্য, মহাবলীপুরম, কেওলাদেও জাতীয় উদ্যান, ফতেহপুর সিক্রি, খাজুরাহোর মন্দির, হাম্পিি এবং গোয়ার গির্জা প্রভৃতি ১৯৮৩ থেকে ১৯৮৬ সাল পর্য ন্ত সবকটি ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটির দ্বারা অনুমোদিত হয়েছিল। এবং সর্ব শেষ ২০২৩ সালে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হলো কর্ণাটকের বেলুড়, হালেবিড এবং সোমনান্থপুরা হোয়সালা মন্দির এবং পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলায় অবস্থিত শান্তিনিকেতন।বর্তমানে ভারতে ৪২ টি ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট রয়েছে।

প্রতি বছর বিশ্বের প্রাকৃতিক নিদর্শন ও নানা ধরনের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাকে তার গুরুত্বের জন্য ইউনেস্কো স্বীকৃত বিশেষ মর্যাদা ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট ঘোষনা দেয়া হয়। আজ আমরা ইউনেস্কো স্বীকৃত ভারতের ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট বা বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের সাথে পরিচিত হই-

তাজমহল (Taj Mahal)

স্থানঃ  আগ্রা, উত্তর প্রদেশ,ভারত। (Agra, Uttar Prodesh,India)

ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ
আগ্রার তাজমহল
  • ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকায় ১৯৮৩ এ এটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
  • এটি পৃথিবীর সপ্তাশ্চর্যের মধ্যে অন্যতম একটি আশ্চর্য।
  • সম্রাট শাহজাহানের পত্নী বেগম মমতাজ মহলের ( আরজুমান্দ বানু বেগম)(৩য়া স্ত্রী) স্মৃতিতে এই সৌধটি নির্মিত হয়
  • প্রধান স্থপত্য শিল্পী ছিলেন উস্তাদ আহমদ লাহেরী।
  • এই সৌধটি তৈরি করতে সময় লেগেছিল ১৬ বছর।
  • ১৯৮৩ সালে সাংস্কৃতিক সম্পত্তি/স্মারক হিসেবে (i)ক্যাটাগরিতে তাজমহল ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকার অন্তর্ভুক্ত হয়।

আগ্রা ফোর্ট (Agra Fort)

স্থানঃউত্তর প্রদেশ,ভারত। (Uttar Pradesh,India)

ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ
আগ্রা ফোর্ট
  • ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকায় ১৯৮৩ এ এটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
  • নির্মাণকাজ শুরু হয় ষোড়শ শতাব্দী ১৫৬৫ সালে আকবরের রাজত্বকালে এবং শেষ হয় যথাক্রমে জাহাঙ্গীর, শাহাজাহান এবং আওরঙ্গজেবের সময়ে অর্থাৎ ১৫৭৩ সালে প্রায় ৯৫ বছর।
  • আগ্রা ফোর্ট নির্মানে মোট খরচ হয়েছিল প্রায় সেই আমলের ৩৫ লক্ষ টাকা। এবং প্রায় ৪ লক্ষ শ্রমিক কাজ করেছিল।
  • ৯৪ একর বা ৩৮ হেক্টর বা আডাই কি.মি. এলাকা জুড়ে অবস্থিত।
  • মালিকঃ       লোদী রাজবংশ (১৫০৪-১৫২৬), মোঘল সম্রাজ্য(১৫২৬-১৫৪০), সুরী রাজবংশ(১৫৪০-১৫৫৫),  মোঘল সম্রাজ্য(১৫৫৬-১৭৬১), ভরতপুর রাজ্য(১৭৬১-১৭৭৪), মোঘল সম্রাজ্য(১৭৭৪-১৭৮৫), মারাঠা সম্রাজ্য ১৭৮৫-১৮০৩), বিৃটিশ সম্রাজ্য (১৮০৩-১৯৪৭)

ইলোরা গুহাসমূহ  (Ellora Caves)

অবস্থানঃ মহারাষ্ট্র,ভারত। (Moharashtra,India)

ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ
ইলোরা গুহাসমূহ
  • ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকায় ১৯৮৩ এ এটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
  • এটি বৌদ্ধ ধর্ম, হিন্দু ধর্ম ও জৈন ধর্মের সাংস্কৃতিক কলার একটি মিত্র কেন্দ্র।

অজন্তা গুহাসমূহ (Ajanta Caves)

অবস্থানঃ মহারাষ্ট্র ,ভারত।(Moharashtra,India)

ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ
অজন্তা গুহাসমূহ
  • ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকায় ১৯৮৩ এ এটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
  • এখানে মোট ৩২ টি প্রস্থরখোদিত গুহা স্মারক বিদ্যমান, যা বৌদ্ধদের ধর্মীয় চিত্রকলার এক অনন্য নিদর্শন।
  • এই গুহা গুলোতে উন্নত মানের চিত্রকলা ও ফ্রেস্কো দেখা যায় ।
  • যা শ্রীলংকার সিগিরিয়া চিত্রকলা স্থাপত্য কলার অনুসারী

কোর্ণাক সূর্য মন্দির (Sun Temple, Konarak)

অবস্থানঃ পুরী জেলা, উড়িষ্যা,ভারত।(Puri District, Odisha, India)

ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ
কোর্ণাক সূর্য মন্দির
  • ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকায় ১৯৮৪ এ এটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
  • এটি ব্ল্যাক প্যাগোডা নামে পরিচিত।
  • এই মন্দিরটি নির্মাণ করান পূর্ব গাঙ্গ রাজবংশের রাজা প্রথম নরসিংহদেব।
  • এটি সূর্যের চব্বিশ চক্র বিশিষ্ট রথের আকারে নির্মিত।

কাজিরাঙ্গা জাতীয় উদ্যান (Kaziranga National Park)

স্থানঃ অসম, ভারত (Asam, India)

ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ
কাজিরাঙ্গা জাতীয় উদ্যান
  • ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকায় ১৯৮৫ এ এটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
  • ভারতীয় একশৃঙ্গ গন্ডারের বৃহত্তম আবাসস্থল।

মানস বন্য প্রাণী অভয়ারণ্য (Manas Wildlife Sanctuary)

স্থানঃ অসম, ভারত (Asam,India)

ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ
মানস বন্য প্রাণী অভয়ারণ্য
  • ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকায় ১৯৮৫ এ এটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
  • ১৯৭৩ সালে এটিকে “ব্যাঘ্র সংরক্ষন কেন্দ্র”(টাইগার রিজার্ভ) ঘোষনা করা হয়।

মহাবলীপুরম স্মারকসমূহ (Group of Monuments at Mahabalipuram)

স্থানঃ তামিলনাড়ু,ভারত  (Tamil Nadu, India)

ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ
মহাবলীপুরম স্মারকসমূহ
  • ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকায় ১৯৮৫ এ এটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
  • এটি সপ্তম ও অষ্টম শতাব্দীতে পল্লব রাজারা নির্মাণ করেছিলেন।
  • এখানে রয়েছে রক-রিলিফ গঙ্গাবতরন, যেটি বৃহত্তম মুক্তাঙ্গনস্থ রক-লিরিফ।

কেওলাদেও জাতীয় উদ্যান (Keoladeo National Park)

স্থানঃ রাজস্থান,ভারত (Rajastan,India)

ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ
কেওলাদেও জাতীয় উদ্যান
  • ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকায় ১৯৮৫ এ এটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
  • এটি একটি রামসার জলাভূমি।
  • অনেক প্রজাতীর পরিযায়ী পাখি এখানে ভীড় জমায়।
  • সমগ্র উদ্যানটি ১৭টি গ্রাম ও ভরতপুর শহর দ্বারা বেষ্টিত।

ফতেপুর সিক্রি (Fatehpur Sikri)

স্থানঃ  উত্তর প্রদেশ,ভারত (Uttor Prodesh,India)

ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ
ফতেপুর সিক্রি
  • ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকায় ১৯৮৬ এ এটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
  • এটি মুঘল সম্রাট আকবর দ্বারা নির্মিত।
  • এই শহরে বুলন্দ দরওয়াজা, পাঁচ মহল, সেলিম চিশতির সমাধি স্থল ছাড়াও জামা মসজিদ নামক ভারতের অন্যতম বৃহৎ মসজিদ অবস্থিত।

খাজুরাহোর মন্দির সমূহ (Kajuraho Group of Monuments)

অবস্থানঃ মধ্যপ্রদেশ,ভারত (Madhya Prodesh,India)

ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ
খাজুরাহোর মন্দির সমূহ
  • ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকায় ১৯৮৬ এ এটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
  • এইগুলো চান্দেলা রাজবংশ কর্তৃক নির্মিত।
  • এই স্মারকসমূহের যেসকল স্থাপনা গুলি আজও টিকে আছে সেগুলো হিন্দু ও জৈন ধর্ম স্থান।

হাম্পি স্মারকসমূহ (Group of Monuments at Hampi)

অবস্থানঃ কর্ণাটক,ভারত (Karnataka,India)

ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ
হাম্পি স্মারকসমূহ
  • ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকায় ১৯৮৬ এ এটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
  • হাম্পিতে বিজয়নগর সাম্রাজ্যের রাজধানী বিজয়নগরের ধ্বংসাবশেষ অবস্থিত।

গোয়ার গির্জা ও কনভেন্ট সমূহ (Churches and Convents of Goa)

অবস্থানঃ গোয়া,ভারত (Goa,India)

ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ
গোয়ার গির্জা ও কনভেন্ট সমূহ
  • ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকায় ১৯৮৬ এ এটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
  • গোয়ার এই স্মারকগুলি “প্রাচ্যের রোম নামে পরিচিত।
  • এখানে সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ স্থানটি হল যীশুর গির্জা।
  • সেন্ট ফ্রান্সিস-জেভিয়ারের সমাধি এই গির্জাতেই অবস্থিত।

চলমান…

ভারতের ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট বিষয়ে আরো জানতে এখানে ক্লিক্ করুন…

Recommended Posts

বাংলাদেশের ঐতিহাসিক মসজিদ
World Heritage Bangladesh

ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন মসজিদ

মুসলমানদের তথা মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র উপসনালয় মসজিদ। বাংলাদেশ মুসলিম সংখ্যা গরিষ্ঠ দেশ হলেও এখানকার ইসলামের ইতিহাস তেমন পুরাতন নয়। বাংলাদেশে কিছু প্রাচীন মসজিদ ছাড়া মোঘল আমলের পূর্বের প্রায় সকল প্রাচীন মসজিদ ই ধ্বংস হয়ে গেছে। আজ আমরা তেমনই কিছু ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন মসজিদ সম্পর্কে জানবো। সিংগাইর মসজিদঃ মধ্যযুগীয় এই সিংগাইর মসজিদটি ষাটগম্বুজ মসজিদের দক্ষিণ-পূর্ব কোনে অবসিহত। […]

Pathokia 

গেঁটেবাত থেকে মুক্তির উপায়

গেঁটেবাত থেকে মুক্তির উপায় শতাধিক প্রকারের বাতরোগের মধ্যে রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস বা গেঁটেবাত অন্যতম। সাধারণত বয়স্করা এ রোগে আক্রান্ত হয়।কম বয়সী ছেলেমেয়েদের বেলায় গিঁটে ব্যথা বা যন্ত্রনা হওয়া রিউমেটিক ফিভার বা বাতজ্বর ( Rheumatic Fever ) জাতীয় অন্য রোগের লক্ষণ হতে পারে। মানব শরীরে রক্তের সঙ্গে ইউরিক অ্যাসিড (Uric Acid) নামে এক ধরনের উপাদান থাকে, যার […]

Pathokia 
Artimis:NASA’s Mega Moon Rocket
Science and Technology

আর্টেমিস : আবারও চাঁদের বুকে মানুষ

আর্টেমিস :আবারও চাঁদের বুকে মানুষ Artimis:NASA’s Mega Moon Rocket দীর্ঘ পাঁচ দশক পর আবারও চাঁদের বুকে মানুষ পাঠানোর অভিযানে নাসা। তিন ধাপের মিশনে মনুষ্যবিহীন প্রথম রকেট টি ২৯ আগস্ট যাওয়ার কথা ছিল। আর শেষ ধাপে পাঠানোর কথা ছিল মানুষ। এর মাধ্যমে শুরু হতে যাচ্ছিল বহুল প্রতীক্ষিত আর্টেমিস যুগের। ফ্লোরিডার কেপ কেনেডি স্পেস সেন্টারে (Kennedy Space […]

Pathokia